আমার ঘরে আমি একা। আর কেউ নেই।
ঝড় বৃষ্টির মধ্যে কোথা থেকে এই চড়ুই পাখিটা আমার টেবিলের উপর এসে পড়লো। বেচারার ঝড়ে বিধ্বস্ত অবস্থা। দেখে ভীষন মায়া লাগলো। করুণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম, ভয় নেই বন্ধু। আমি দুষ্টলোক নই। তোমার কোনো ক্ষতি করবো না। তুমি আশ্রয় পাবে। খাবার খাবে। আরামে থাকো। যখন ইচ্ছা চলে যেও। হঠাত তোমাকে অপ্রত্যাশিত এক আকাশ আনন্দ পেয়েছি।
আমি এক মুঠ চাল এনে দিলাম।
ছোট একটা বাটিতে সামান্য পানি এনে দিলাম। চড়ুই চাল খেলো না। পানিও না। খেয়াল করে দেখলাম পাখিটা উড়ছে না। ডানা ঝাপটাচ্ছে না। স্থির হয়ে আছে। যেন অনেক ক্লান্ত। তার মানে পাখিটা ঝড়ে আহত হয়েছে। আমি কি করবো? বুঝতে পারছি না। আহত চড়ুই পাখির চিকিৎসা কিভাবে করতে হয় তা-ও তো জানি না। সুরভিকে ফোন দিলাম। সে বলল, আমি জানি না। আমার এক মামা গ্রামে থাকেন। তাকে ফোন দিলাম, সে-ও কিছু বলতে পারলো না।
পাখিটাকে আমি স্পর্শ করলাম না।
তাকে তার মতো থাকতে দিলাম। খাবার আর পানি পড়ে রইলো। রাতে আর ফ্যান ছাড়লাম না। যদি পাখি হঠাত উড়ে গিয়ে ফ্যানের পাখায় আঘাত পায়। সকালে দেখি পাখিটা যায়নি। পাখিটা চলে যাওয়ার জন্য একটা জানালা খোলা রেখেছিলাম। অথচ ঝড় থেমে গেছে। নড়ছে না। পাখিটা মরে গেছে। ভীষণ কষ্ট পেলাম। আমার চোখে পানি চলে এসেছে। অপ্রত্যাশিত আঘাত। যে অপ্রত্যাশিত আনন্দ দেয়, সে-ই আবার অপ্রত্যাশিত আঘাত দেয়।
মৃত পাখি! কাল রাতেও বেঁচে ছিলো। কি সুন্দর অথচ করুণ করে আমার দিকে তাকিয়েছিলো। পাখিটা কি আমার কাছে মরতেই এসেছিলো? মাঠে নিয়ে পাখিটাকে কবর দিলাম। মসজিদে গিয়ে হুজুরকে বললাম, পাখিটার জন্য দোয়া করতে। এরপর আমি চড়ুই পাখি নিয়ে কিছু পড়াশোনা করলাম। চড়ুই পাখি সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। ঘুরে ঘুরে অনেক চড়ুই পাখির ছবি তুললাম। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গিয়ে অসংখ্য চড়ুই পাখির দেখা পেলাম
إرسال تعليق